উন্নত রাষ্ট্র গঠনে বেসরকারি শিক্ষা জাতীয়করণের বিকল্প নাই
শিক্ষকরাই হচ্ছেন জাতির মেরুদণ্ড ও মূল্যবোধ সংরক্ষণের ধারক এবং বাহক। শিক্ষকরা আলোকিত মানুষ এবং সমাজ বিনির্মানের কারিগর। শিক্ষকদের মর্যাদা কোনো দিন ম্লান হবার নয়। জাতিকে উন্নতির শিখরে আরোহিত দেখতে চাইলে মেরুদণ্ড গড়ার কারিগরদেরকে জাতীয়করণের আওতায় আনা অতীব জরুরী। কেননা বেসরকারি শিক্ষকদের চাকুরী সরকারিকরণ করা হলে তারা যদি নৈতিকভাবে তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে পালন করেন তবে সেই জাতির উন্নতির চরম শিখরে ওঠা শুধু সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়াতে বাধ্য।
পৃথিবীর এমন একটি দেশের নাম কেউ কি বলতে পারবেন যে দেশে অষ্টম শ্রেণি পাস সরকারি পিয়নের চাইতে বেসরকারি শিক্ষকদের বেতন কম। সেটা বলতে গেলেই আমাদের দেশের বেসরকারি শিক্ষকদের নাম সবার আগে সামনে চলে আসবে। রাষ্ট্রীয়ভাবে আমাদের দেশে বেসরকারি শিক্ষকদের ওপর বেতন বৈষম্যের অবিচার করা হচ্ছে। যা কখনো কারোর কাম্য হতে পারে না। এর থেকে পরিত্রাণ চায় বেসরকারি শিক্ষকরা।
আমাদের দেশে অনার্স মাস্টার্স শিক্ষকরা দীর্ঘ ২৮ বছর ধরে বেতন বৈষম্যের শিকার হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। শুধুমাত্র জনবল কাঠামোতে অন্তর্ভুক্ত না হওয়ার কারণে বছরের পর বছর ধরে তারা বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন। তারা প্রতিষ্ঠান থেকে নামেমাত্র যে বেতন পান তাও আবার করোনার কারণে বন্ধ। এতে তারা সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন। তাই এর থেকে অবসান চান এই অনার্স মাস্টার্স শিক্ষকরা।
আবার যদি ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষকদের কথা বলি তারা যে অবহেলিত সেটি সম্পর্কে সবাই অবগত  আছেন। তারা অনেকটাই নিজের খেয়ে  অন্যের কাজ করে যাচ্ছেন। এতে দেশের মানুষ উপকৃত হচ্ছেন ঠিকই কিন্তু জাতীয়করণ করার ক্ষেত্রে তারা পুরোপুরি অবহেলার শিকার। তাই প্রাথমিকের মতো ইবতেদায়ি মাদ্রাসা গুলোকে আগামী অর্থ-বাজেটে জাতীয়করণ করে শিক্ষাব্যবস্থাকে গতিশীল করুন। তাহলে শিক্ষায় প্রাণ ফিরে পাবে।
সর্বোপরি আমরা যদি উন্নত দেশ হিসাবে ডেনমার্কের শিক্ষাব্যবস্থার কথা বলি। তাহলে দেশটির শুধু মাধ্যমিক স্কুল পর্যায়ের শিক্ষকদের গড় মাসিক সম্মানী প্রায় সাড়ে চার লক্ষ বাংলাদেশী টাকা।  আর এই কারনেই ডেনমার্কের শক্তিশালী অর্থনীতির ভিত্তি নিহিত তাদের শিক্ষাব্যবস্থায়। একটি সুশিক্ষিত ও কর্মঠ জাতি গঠনে শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। ডেনমার্ক সঠিক সময়ে উপযুক্ত স্থানে বিনিয়োগের মাধ্যমে যে সুফল ঘরে তুলেছে তা আমাদের দেশে তথা সমগ্র বিশ্বের জন্য অনুকরণীয়।
শিক্ষক ও কলামিস্টঃ
মোঃ আজাদ (গণসংযোগ বিষয়ক সচিব)। 
বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বাশিস) কেন্দ্রীয় কমিটি।